মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষেতলালে হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ, ক্ষুব্ধ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা

ক্ষেতলালে হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ, ক্ষুব্ধ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা

শাহিনুর ইসলাম শাহিন, ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) 
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে হোপপীর হাটে গরু, ছাগল, অটোভ্যান, সাইকেল ক্রয়-বিক্রয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুব্ধ এবং চরম ভোগান্তির শিকার ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, উপজেলার সবচেয়ে বড় হাটটি হোপপীর হাট নামে পরিচিত। সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার ও শুক্রবার এ হাট বসে। প্রতি হাটের দিন আশপাশের জেলাগুলো থেকেও এখানে ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতারা আসে। এ হাটে পশুর মধ্যে গরু, খাসি-বকরি, ভেড়া, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয় হয়। এছাড়াও বাই-সাইকেল, অটোভ্যানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র এই হাটে ক্রয়-বিক্রয় হয়। গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) হাটের দিন ছিল। এ দিন দুপুরে সরেজমিনে হাটে গিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত টোল অনুযায়ী হাটে গরু প্রতি ৫০০ টাকা, ছাগল প্রতি ২৬০ টাকা, অটোভ্যান ও সাইকেল প্রতি ১৬০ টাকা টোল আদায়ের নিয়ম রয়েছে। হাটে এ সংক্রান্ত একটি টোল চ্যার্টের বিল বোর্ডও ঝুলিয়েছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।
তবে ইজারাদাররা সুকৌশলে প্রতি গরু ক্রয়-বিক্রয়ে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৫৫০ টাকা আদায় করছে। এক্ষেত্রে ক্রেতাকে ৫০০ এবং বিক্রেতাকে ৫০ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। একইভাবে প্রতিটি ছাগল ক্রয়-বিক্রয়ে ২৬০ টাকার পরিবর্তে ২৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে ক্রেতাকে ২৬০ টাকা ও বিক্রেতাকে ২০ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে।
পাশাপাশি ওই হাটে বাইসাইকেল, রিক্সা ও অটোভ্যান ক্রয়-বিক্রয়ে ১৬০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত চ্যার্টে উল্লেখ থাকলেও সেখানেও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। প্রতি হাটে ১৫০টি গরু ও ২৫০-৩০০টি খাসি-বকরী এ হাটে ক্রয়-বিক্রয় হয়। এসব ক্রয়-বিক্রয়ে এভাবেই প্রতিনিয়ত আদায় করা হয় অতিরিক্ত টাকা।
হাটে গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা একাধিক ব্যক্তি এসব অনিয়মের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ব্যাপারে তারা আরো জানিয়েছেন এখানে তাদের করার কিছুই নেই। কর্তৃপক্ষ যেভাবে নিচ্ছে সেভাবে দিতে তারা বাধ্য হচ্ছেন।
যেখানে সরকার নির্ধারিত টোল অনুযায়ী হাটে গরু প্রতি ৫০০ টাকা, ছাগল প্রতি ২৬০ টাকা নেওয়ার কথা কিন্তুু হাটে গরুর জমা ৫৫০ এবং বকরির জমা ২৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এই অতিরিক্ত টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে হাট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আহামেদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সরকারি নিয়মেই টাকা নেওয়া হয়। আমরা প্রতি গরু ৫০০ এবং খাসি-বকরী ২৬০ টাকা পাই। আর বাকিটা যারা লিখনীর দায়িত্বে থাকে তারা নেয়।
লিখনির টাকা বিক্রেতার থেকে কেন নিবেন  এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ওই একি বিষয়, বলে ব্যাপারটি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে জানতে হাটের ইজারাদার রাসেল দেওয়ান মিলনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জয়পুরহাট, পাঁচবিবি হাটে যে টোল নেওয়া হয় সেটির সমন্বয় করেই আমরা হোপপীর হাটে টোল আদায় করি। গরু প্রতি ৫০০ টাকা আমাদের আর ৫০ টাকা লেখনি বাবদসহ মোট ৫৫০ টাকা নেওয়া হয়। যারা বিক্রি করে তাদের কাছ থেকে লেখনির টাকা নেওয়া হয়। আপনি একদিন আমার সাথে নিরিবিলি বসেন আমি চার্ট দিয়ে দিবো দেখে নিয়েন। আমি সামনের দিন গিয়ে বিষয়টি দেখব। কেউ বেশি নিলে শিথিল করে দেব।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিন্নাতুল আরা বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে শুনিনি। তহসিলদারকে ওখানে পাঠিয়েছি। টোল আদায়ের চার্ট ওখানে লাগানো আছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ট্যাগ :

শার্শার বাগআঁচড়ায় খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া-মাহফিল 

ক্ষেতলালে হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ, ক্ষুব্ধ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা

প্রকাশের সময় : ১০:২৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৪
শাহিনুর ইসলাম শাহিন, ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) 
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে হোপপীর হাটে গরু, ছাগল, অটোভ্যান, সাইকেল ক্রয়-বিক্রয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষুব্ধ এবং চরম ভোগান্তির শিকার ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, উপজেলার সবচেয়ে বড় হাটটি হোপপীর হাট নামে পরিচিত। সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার ও শুক্রবার এ হাট বসে। প্রতি হাটের দিন আশপাশের জেলাগুলো থেকেও এখানে ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতারা আসে। এ হাটে পশুর মধ্যে গরু, খাসি-বকরি, ভেড়া, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয় হয়। এছাড়াও বাই-সাইকেল, অটোভ্যানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র এই হাটে ক্রয়-বিক্রয় হয়। গত শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) হাটের দিন ছিল। এ দিন দুপুরে সরেজমিনে হাটে গিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত টোল অনুযায়ী হাটে গরু প্রতি ৫০০ টাকা, ছাগল প্রতি ২৬০ টাকা, অটোভ্যান ও সাইকেল প্রতি ১৬০ টাকা টোল আদায়ের নিয়ম রয়েছে। হাটে এ সংক্রান্ত একটি টোল চ্যার্টের বিল বোর্ডও ঝুলিয়েছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।
তবে ইজারাদাররা সুকৌশলে প্রতি গরু ক্রয়-বিক্রয়ে ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৫৫০ টাকা আদায় করছে। এক্ষেত্রে ক্রেতাকে ৫০০ এবং বিক্রেতাকে ৫০ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। একইভাবে প্রতিটি ছাগল ক্রয়-বিক্রয়ে ২৬০ টাকার পরিবর্তে ২৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে ক্রেতাকে ২৬০ টাকা ও বিক্রেতাকে ২০ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে।
পাশাপাশি ওই হাটে বাইসাইকেল, রিক্সা ও অটোভ্যান ক্রয়-বিক্রয়ে ১৬০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত চ্যার্টে উল্লেখ থাকলেও সেখানেও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। প্রতি হাটে ১৫০টি গরু ও ২৫০-৩০০টি খাসি-বকরী এ হাটে ক্রয়-বিক্রয় হয়। এসব ক্রয়-বিক্রয়ে এভাবেই প্রতিনিয়ত আদায় করা হয় অতিরিক্ত টাকা।
হাটে গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয় করতে আসা একাধিক ব্যক্তি এসব অনিয়মের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ব্যাপারে তারা আরো জানিয়েছেন এখানে তাদের করার কিছুই নেই। কর্তৃপক্ষ যেভাবে নিচ্ছে সেভাবে দিতে তারা বাধ্য হচ্ছেন।
যেখানে সরকার নির্ধারিত টোল অনুযায়ী হাটে গরু প্রতি ৫০০ টাকা, ছাগল প্রতি ২৬০ টাকা নেওয়ার কথা কিন্তুু হাটে গরুর জমা ৫৫০ এবং বকরির জমা ২৮০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এই অতিরিক্ত টাকা কেন নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে হাট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আহামেদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সরকারি নিয়মেই টাকা নেওয়া হয়। আমরা প্রতি গরু ৫০০ এবং খাসি-বকরী ২৬০ টাকা পাই। আর বাকিটা যারা লিখনীর দায়িত্বে থাকে তারা নেয়।
লিখনির টাকা বিক্রেতার থেকে কেন নিবেন  এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ওই একি বিষয়, বলে ব্যাপারটি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে জানতে হাটের ইজারাদার রাসেল দেওয়ান মিলনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জয়পুরহাট, পাঁচবিবি হাটে যে টোল নেওয়া হয় সেটির সমন্বয় করেই আমরা হোপপীর হাটে টোল আদায় করি। গরু প্রতি ৫০০ টাকা আমাদের আর ৫০ টাকা লেখনি বাবদসহ মোট ৫৫০ টাকা নেওয়া হয়। যারা বিক্রি করে তাদের কাছ থেকে লেখনির টাকা নেওয়া হয়। আপনি একদিন আমার সাথে নিরিবিলি বসেন আমি চার্ট দিয়ে দিবো দেখে নিয়েন। আমি সামনের দিন গিয়ে বিষয়টি দেখব। কেউ বেশি নিলে শিথিল করে দেব।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিন্নাতুল আরা বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে শুনিনি। তহসিলদারকে ওখানে পাঠিয়েছি। টোল আদায়ের চার্ট ওখানে লাগানো আছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।