
আমিনুর রহমান, জবি সংবাদদাতা।।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রথম নারী ডিন ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। তিনি সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের স্থলাভিষিক্ত হলেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে তিনিই প্রথম কোনো নারী উপাচার্য আর দেশের ইতিহাসে চতুর্থ নারী উপাচার্য।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোছাঃ রোখছানা বেগমের স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে- উপাচার্য হিসেবে তার নিয়োগের মেয়াদ চার বছর। তবে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তিনি নিয়মিত চাকরির বয়সপূর্তিতে মূল পদে প্রত্যাবর্তনপূর্বক অবসর গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন শেষে আগের পদের মেয়াদের অবশিষ্ট সময় পূর্ণ করবেন। তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি পাবেন। বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে।
এছাড়া রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
সাদেকা হালিমের পিতা ফজলুল হালিম চৌধুরী ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। তার পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামে।
সাদেকা হালিম ঢাকার উদয়ন বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান সাদেকা হালিম। পরবর্তীতে কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি থেকে দ্বিতীয়বার স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি কমনওয়েলথ স্টাফ ফেলোশিপ নিয়ে পোস্ট-ডক্টরেট সম্পন্ন করেন যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটি থেকে।
২০০৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত তথ্য কমিশনে প্রথম নারী তথ্য কমিশনার পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তিনি তিন মেয়াদে শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও তিনবার সিনেট সদস্য ছিলেন।
অধ্যাপক সাদেকা হালিম জাতীয় শিক্ষানীতি কমিটি ২০০৯ এর ১৮ জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের কমিটিতে সদস্য ছিলেন। পেশাগত জীবনে সাদেকা হালিম অতিথি অধ্যাপক হিসেবে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনার বকু বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেছেন।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন স্টাডিজ বিভাগ ও আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টের কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হায়ার এডুকেশন লিংক প্রোগ্রামের অধীনে কুইন্স-এর ভিজিটিং ফেলো ছিলেন সাদেকা হালিম। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে তার লেখা প্রায় ৫০টি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। লিঙ্গ-সমতা, বন ও ভূমি, উন্নয়ন, আদিবাসী ইস্যু, মানবাধিকার এবং তথ্য অধিকার প্রভৃতি তার গবেষণার বিষয়। ২০২২ সালের কাউন্সিলে তাকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য করা হয়।
আমিনুর রহমান, জবি সংবাদদাতা 















