লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজির হাট ইউনিয়নের মিয়া পাড়া এলাকার ভ্যানচালক ইউসুফ এর ছেলে এমরান হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। সে পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান। বিজ্ঞান বিভাগে হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমি থেকে এসএসসি ও লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এমরান।
তার বাবা একটি ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানির ভ্যান চালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ওই পরিবারে এখন খুশির জোয়ার বইছে।
মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্যই প্রথমবারের মতো ঢাকায় পা রাখেন এমরান হোসেন। এর আগে কখনো তার ঢাকায় যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তিনি বাবার একমাত্র ছেলে। তার আরও ৪ বোন রয়েছে।
এমরানের বাবা ইউসুফ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিতে বুধবার (৮ মার্চ) প্রথমবারের মতো ঢাকায় গিয়ে এক আত্মীয়ের কাছে ওঠেন এমরান হোসেন। শুক্রবার (১০ মার্চ) পরীক্ষা দিয়ে ওই আত্মীয়ের সঙ্গেই ঢাকায় ছিলেন। রোববার (১২ মার্চ) মেডিকেলে ভর্তির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে তিনি ৪৭৯তম স্থান অর্জন করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
এমরান হোসেন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছেন। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগের খবর পেয়ে তার বাবা-মা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিরোজ আলম বলেন, এবার আমাদের কলেজ থেকে ৫ জন মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এরমধ্যে এমরান একজন। ছেলেটি খুব মেধাবী। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে প্রথম ছেলেটিকে আমাদের কলেজের লাইব্রেরিয়ান সাজ্জাদুর রহমান পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। ২-৩ মাস সে আমার কাছে ক্লাসের বাইরে পড়েছিল। প্রতিদিন বাড়ি থেকে কলেজ আসতে তার প্রায় ১০০ টাকার মতো খরচ হতো। এ খরচ বহন করা তার জন্য কষ্টসাধ্য ছিল। এজন্য আমার কাছে আর পড়তে আসেনি। ক্লাসেও নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারতো না। তবে সবগুলো পরীক্ষায় সে ভালো ফলাফল করতো। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় সে আজ সফল।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আর্থিকভাবে অসচ্ছল হলে উপজেলা প্রশাসন থেকে অবশ্যই তাকে সহযোগিতা করা হবে।