
যশোরের নাভারণ হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এতে করে আতংকে রয়েছেন বাস, ট্রাক, মাইক্রো, অটোরিকশা, নছিমন, করিমনসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা ও সাধারণ মানুষ।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষার নামে এসব চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এছাড়া হাইওয়ে দিয়ে চলাচল করা দূরপাল্লার অনেক পরিবহনের সাথে রয়েছে হাইওয়ে পুলিশের মাসিক চুক্তি। যেসব গাড়িতে চুক্তি নেই শুধু সেই গাড়িগুলো আটক করে মামলা দিচ্ছেন তারা, এমন অভিযোগ করেছেন অনেক চালক।
এছাড়া যেসব যানবাহন ওই চুক্তির আওতায় পড়ে না, সেগুলো আটক করে মামলা দেওয়া যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
বেনাপোল-যশোর ও যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের শার্শা উপজেলার কামারবাড়ি মোড়, নাভারণ বাজার, উলাশী বাজার, হাড়িখালী মোড়, জামতলা মবিল ফ্যাক্টরির সামনে ও বেনাপোল কাগজপুকুর এলাকায় প্রায় নিয়মিতই পুলিশ চেকপোস্ট বসায়। এ সময় তারা যানবাহন থামিয়ে চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বাগআঁচড়ার বেলতলা বাজার এলাকার যানবাহন চালকদের অভিযোগ গতকাল সকালে পোশাক পরিহিত অবস্থায় হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম ওই এলাকার মূল সড়কে অবস্থান করছে। এসময় তারা ৪টি ইজিবাইক, ৮/১০টি মোটরসাইকেল, ২টি ট্রলি ও ২টি ছোট ট্রাক জব্দ করে এবং কনস্টেবলের মাধ্যমে অর্থ আদায় করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক চালক বলেন, গাড়ির কাগজপত্র ঠিক থাকলেও চা নাস্তার কথা বলে তারা চাঁদা আদায় করে থাকেন। চাঁদা না দিলে গাড়ির নামে মামলা দেন। এ ভয়ে আমরা চাঁদা দিয়ে দেই। বর্তমান হাইওয়ে ওসি রোকনুজ্জামান যোগদানের পর থেকে ব্যাপকভাবে চাঁদাবাজি চলছে। তাদের কাছে চালকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
এদিকে সাধারণ মানুষের অভিযোগ, চাঁদাবাজির কোন খবর যাতে পত্রিকায় না আসে সেজন্য তিনি সাংবাদিকদের সাথে সুসম্পর্ক রাখেন।
ট্রাকচালক উজ্জ্বল বলেন, গাড়ির কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও পুলিশ চা-নাস্তার খরচের কথা বলে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মামলা দিয়ে হয়রানি করে। মামলার ভয়েই চালকরা টাকা দিতে বাধ্য হন।
মোটরসাইকেলচালক সবুজ হোসেন জানান, তার মোটরসাইকেলের লাইসেন্স, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট সবই ছিল। তারপরও শুধুমাত্র তিনজন আরোহী থাকায় নাভারণ হাইওয়ে পুলিশ মামলা দিয়েছে। তার দাবি, প্রথমে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল।
এ বিষয়ে সোমবার সকালে নাভারণ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকনুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে প্রথমে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে তিনি বলেন চাঁদাবাজির অভিযোগ সঠিক নয়।