
১৪ বছর ধরে নিয়মিত চেম্বারে চিকিৎসা দিচ্ছেন আব্দুস ছালাম। পরিচয় দেন তার আছে ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা। যশোরের ঝিকরগাছার নন এমপিও একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০০০ সালে মানবিক বিভাগে দাখিল পাশ করেছেন আব্দুস ছালাম। তাও আবার অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে। এরপর আর কোনোদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বারান্দায় পা রাখেননি। তিনি এখন চক্ষু ডাক্তার। তার সুসজ্জিত চেম্বার, আসবাবপত্র সবই আছে। নেই শুধু অনুমোদিত ডিগ্রি। পড়াশোনার দৌড় সর্বোচ্চ দাখিল পাশ হলেও তার নামের আগে ডাক্তার এবং নামের পরে ডিগ্রি লিখেন।
ভুয়া চক্ষু ডাক্তার আব্দুস ছালাম (৪৩) ঝিকরগাছা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোবারাকপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে।
যশোর অঞ্চলের একসময়ের স্বণামধন্য চক্ষু ডাক্তার গোলাম সরওয়ারের এসিস্ট্যান্ট ছিলেন আব্দুস ছালাম। ঝিকরগাছা বোটঘাটে ছিল তার চেম্বার। বয়সের ভারে গোলাম সরওয়ার অবসর নেওয়ার পর আব্দুস ছালাম তার বাড়িতেই চেম্বার খুলে বসেছেন। সেখানে বসে তিনি ৩৫০ টাকা ফি নিয়ে নিয়মিত রোগী দেখছেন, প্রেসক্রিপশন লিখছেন। গ্রামের মানুষের কাছে পরিচয় দেন তিনি ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ডাক্তার। আছে ডি ও এ ডিগ্রি। তার এসব কথায় বিভ্রান্ত হয়ে সহজসরল মানুষ গুলো প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস ছালাম বলেন, তিনি ১৯৯৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন কিন্তু পরীক্ষা দেননি। পরবর্তীতে ২০০০ সালে নন এমপিও প্রতিষ্ঠান বিষেহরি দাখিল মাদরাসা থেকে অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসাবে কোনোমতে দাখিল পাশ করেন। এর আগে থেকেই তিনি ডাক্তার গোলাম সরওয়ার এর সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে কাজ করতে করতেই ডাক্তারি শিখেছেন। তিনি তার ভিজিটিং কার্ডে লেখা ডিগ্রি ডি ও এ (DOA) এর মানে বলেন, ডিপ্লোমা অফ এসিস্ট্যান্ট। এটা তিনি যশোরের কেশবপুরের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জন করেছেন তবে প্রতিষ্ঠানটির নাম বলতে পারেননি। এভাবে ডাক্তার পরিচয়ে প্রেসক্রিপশন লেখার অনুমতি আছে কিনা সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডাক্তার গোলাম সরওয়ার তাকে অভিজ্ঞতার সনদ প্রদান করে গেছেন।
এদিকে ডাক্তার না হয়েও ডাক্তারি করা প্রতারক আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আব্দুর রশিদ বলেন, এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং বেআইনি কাজ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্টাফ রিপোর্টার 









