প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ১, ২০২৫, ২:৫৭ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২৩, ৮:১৮ পি.এম
অবশেষে উচ্ছেদ হলো ঝিকরগাছা রেলস্টেশনের সেই টোং দোকান

রায়হান সরদার, প্রতিনিধি ঝিকরগাছা।। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে উচ্ছেদ হলো ঝিকরগাছা রেলস্টেশনের সেই টোং দোকানটি। ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। মাত্র বছর দেড়েক আগে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ও পরিচ্ছন্ন ঝিকরগাছা রেলস্টেশনের সৌন্দর্য্য হানি করতে স্টেশনে কর্মরত একটি স্বার্থান্মেষী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। অভিযোগ ওঠে স্টেশনের মূল ভবন ও প্লাটফর্ম সংলগ্ন জায়গা ব্যক্তি নামে বরাদ্দ পেতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তদরির ও সুপারিশ করছেন স্থানীয় স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার নিগার সুলতানা। জানাজানি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক নিন্দা, সমালোচনা ও তোলপাড়ের মুখে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় নির্দেশে কথিত বরাদ্দ বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু উল্লেখিত বিতর্কিত ও আলোচিত জায়গায় সদ্য তৈরি টিনের চালা, বাঁশ-খুঁটির তৈরি খুপড়ি দোকান ঘরটি অপসারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে কালক্ষেপণ করতে থাকে এই স্টেশন মাস্টার। এতে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যার কারণে রেলওয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে অবৈধ এই স্থাপনাটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
এদিকে ঝিকরগাছা রেলওয়ে স্টেশনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার বিস্তর অভিযোগের সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য। প্রতিদিন এসব উঠতি বয়সী ইভটিজারদের ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন কিশোরী, তরুণী অথবা বয়স্ক মহিলারাও। স্টেশনে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনুপস্থিতির সুযোগে এসব ইভটিজারদের দীর্ঘ সময় প্লাটফর্মের উপর অযাচিত আড্ডা দিতে দেখা যায়। ফলে, বিব্রত হওয়ার পাশাপাশি বখাটে এসব ইভটিজারদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ রেলযাত্রী ও ফুলপ্রেমী পর্যটক। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ রেলস্টেশন প্লাটফর্ম ধরে যাতায়াত করার সময় ইভটিজিংয়ের শিকার হয়। বিভিন্ন সময়ে স্টেশন এলাকা থেকে মোবাইল সহ ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে।
ফুলের রাজধানী গদখালি ঘুরতে আসা পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দে ও নিরাপদ ভ্রমণে জনপ্রিয় বাহন রেলগাড়িতে চেপে আসা প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রেলযাত্রীর অভিযোগ ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির একটি করে টয়লেট সংযুক্ত বিশ্রামাগার থাকলেও তা সর্বক্ষণ তালাবদ্ধ দেখতে পাওয়া যায়। স্ট্রীট লাইটগুলো বিকল থাকায় সন্ধ্যার পর প্লাটফর্ম অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। নেই নৈশ প্রহরীর ব্যবস্থা। স্টেশনের নির্দিষ্ট পরিচ্ছন্নতা কর্মী তার চাকরি অন্য একজনকে দিয়ে বাড়িতে বসেই বেতন তুলছে।
অপরদিকে রেলস্টেশনের অদূরে উন্মুক্ত দু’টি গাড়ি পার্কিং ও ফাঁকা চত্বরে ময়লা-আবর্জনার স্তুপের পঁচা দূর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত গনশৌচাগার না থাকায় এটি এখন মুত্র ত্যাগের স্থানে পরিণত হয়েছে। এই চত্বরের আশপাশের এলাকার বাসাবাড়ি, বেকারী, হোটেল, জবাইকৃত হাঁস-মুরগির পাশাপাশি কাঁচা বাজারের বর্জ্য, উচ্ছিষ্ট-আবর্জনায় স্টেশন এলাকার পরিবেশ বিপর্যস্ত। এটি যেন দেখার কেউ নেই!
এত অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত স্টেশন মাস্টার নিগার সুলতানার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারটি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি।
উল্লেখ্য অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অসদাচরণ, সাংবাদিকদের হুমকি প্রদানকারী স্টেশন মাস্টার নিগার সুলতানার দ্রুত বদলী দাবি করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
সাম্প্রতিক বাংলা-ডট
Copyright © 2023 সাম্প্রতিক বাংলাদেশ © All Rights Reserved.