আন্তর্জাতিক হ্যাকার চক্র ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ এক হাজার ৬২৩ মার্কিন ডলার চুরি করে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো দুই কোটি ডলার ফেরত পায় বাংলাদেশ। বাকি আট কোটির বেশি ডলার ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়, যা এখনো ফেরত পায়নি বাংলাদেশ। ওই অর্থ উদ্ধারে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটান সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা করে বাংলাদেশ। মামলায় ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক, ডলার পেসোতে রূপান্তর করতে ব্যবহার করা ক্যাসিনোর মালিক কিম অংসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিবাদী করা হয়। তবে মামলার পর ২০২০ সালের মার্চ মাসে ম্যানহাটন সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট জানিয়ে দেন, মামলাটি তাঁদের এখতিয়ারভুক্ত নয়। এরপর বাংলাদেশ ২০২০ সালের ২৭ মে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট কোর্টে মামলা করে।
আদালত সমঝোতার নির্দেশ দিলে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল গত ২৮ জানুয়ারি ফিলিপাইনে পৌঁছে। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস, আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, বিএফআইইউর ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের দুজন করে কর্মকর্তা। প্রতিনিধিদল ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল, ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস ও বার্নাস ল অফিসের সঙ্গে বৈঠক করেছে। গতকাল শুক্রবার এই তিন পক্ষের সঙ্গে একটি সমন্বয়সভা হয় বলে জানা গেছে। এ ছাড়া দেশটির মাকাতি, মান্ডলুয়ং ও প্যারানাক শহরের তিনটি আঞ্চলিক বিচারিক আদালতের শুনানিতে অংশ নিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল। আর যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের মামলা চালানোর জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা করছে আইনি প্রতিষ্ঠান কোজেন ও’কনর।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা ছাড়াও ফিলিপাইনের মুদ্রাবিনিময় প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের সম্পত্তি ক্রোকের এক মামলায় সাক্ষ্য দেন। মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্সের আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আবেদনের বিষয়েও শুনানি হয়।
